শাহজালাল বিমানবন্দরে তৃতীয় টার্মিনালের কাজ শুরু ২৮ ডিসেম্বর

শাহজালাল বিমানবন্দরে তৃতীয় টার্মিনালের কাজ শুরু ২৮ ডিসেম্বর।

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ কাজ শুরু হবে ২৮ ডিসেম্বর। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

বুধবার (১১ ডিসেম্বর) বিমান মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে- আইনি জটিলতা, বেবিচকের বড় কাজের অভিজ্ঞতা না থাকাসহ নানা কারণে ধীর গতিতে এগিয়েছে এই প্রকল্প। এসব কারণে বেড়ে গিয়েছে ব্যয়। ২০১৫ সালে শাহজালাল বিমানবন্দরে থার্ড টার্মিনাল নির্মাণ ও সম্প্রসারণের প্রাথমিক সম্ভাব্যতা প্রতিবেদন ও খসড়া মাস্টার প্ল্যান প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে তোলা হয়। ২০১৭ সালে ২৪ অক্টোবর শাহজালাল বিমানবন্দর সম্প্রসারণ প্রকল্পটির অনুমোদন দেয় একনেক। নির্মাণ কাজে অর্থায়ন করছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)।

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ২৮ ডিসেম্বর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করার সম্মতি দিয়েছেন। একই দিনেই বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের নতুন দুটি বোয়িং ৭৮৭-৯ ড্রিমলাইনারের উদ্বোধন করবেন। আমরা আশা করছি, ২০২৩ সালের মধ্যে থার্ড টার্মিনালের নির্মাণ কাজ শেষ হবে।’

সূত্র জানায়, থার্ড টামিনাল নির্মাণ কাজ শুরু করতে গিয়ে বেশ কয়েকবার আইনি জটিলতায় পড়তে হয় বেবিচককে। বিমানবন্দর এলাকায় বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে জমি লিজ দেওয়া ছিল। এসব প্রতিষ্ঠানকে জায়গা ছেড়ে দেওয়ার নোটিশ দিলে আদালতে মামলা করে বেঙ্গল ফাউন্ডেশন।

বেবিচক সূত্রে জানা গেছে, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালের নির্মাণ কাজ শেষ হতে সময় লাগবে চার বছর। থার্ড টার্মিনালের ভবন হবে তিন তলা। ২ লাখ ৩০ হাজার বর্গমিটার আয়তনের এই ভবনটির নকশা করেছেন স্থপতি রোহানি বাহারিন। তিনি এনওসিডি-জেভি জয়েন্ট বেঞ্চার পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের আওতাধীন আন্তজার্তিক খ্যাতিসম্পন্ন সিপিজি করপোরেশন (প্রাইভেট) লিমিটেডের (সিঙ্গাপুর) স্থপতি। থার্ড টার্মিনালের বহির্গমণের জন্য ১৫টি সেলফ সার্ভিস (স্ব-সেবা) চেক ইন কাউন্টারসহ মোট ১১৫টি চেক-ইন কাউন্টার থাকবে।

এছাড়া, ১০টি স্বয়ংক্রিয় পাসপোর্ট কন্ট্রোল কাউন্টারসহ মোট ৬৬টি ডিপারচার ইমিগ্রেশন কাউন্টার থাকবে। আগমনীর ক্ষেত্রে ৫টি স্বয়ংক্রিয় চেক-ইন কাউন্টারসহ মোট ৫৯টি পাসপোর্ট এবং ১৯টি চেক-ইন অ্যারাইভ্যাল কাউন্টার থাকবে। টার্মিনালে ১৬টি আগমনী ব্যাগেজ বেল্ট স্থাপন করা হবে।

অতিরিক্ত ওজনের ব্যাগেজের জন্য ৪টি পৃথক বেল্ট স্থাপন করা হবে। তৃতীয় টার্মিনালে সঙ্গে বর্তমান টার্মিনাল ভবনগুলোর সঙ্গে প্রকল্পের প্রথম ধাপে কোনও যোগযোগ ব্যবস্থা থাকবে না। তবে প্রকল্পের দ্বিতীয় ধাপে কানেকটিং কোরিডোরের মাধ্যমে পুরনো টার্মিনাল ভবনগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করা হবে। গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য তৃতীয় টার্মিনালে সঙ্গে মাল্টিলেভেল কার পার্কিং বিল্ডিং ভবন নির্মাণ করা হবে, সেখানে ১ হাজার ৪৪টি গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা থাকবে।

বর্তমানে ভিভিআইপিদের জন্য শাহজালালে পৃথক ভিভিআইপি কমপ্লেক্স রয়েছে, সেটি ভেঙে ফেলা হবে। তবে তৃতীয় টার্মিনালে পৃথকভাবে স্বতন্ত্র কোনও ভিভিআইপি টার্মিনাল নির্মাণ করা হবে না। তৃতীয় টার্মিনাল ভবনের অভ্যন্তরে দক্ষিণ পাশে সর্বাধুনিক সুবিধাসম্পন্ন ভিভিআইপি স্পেস থাকবে।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.