বেশি পেঁয়াজ খাবেন না যেসব কারণে

বেশি পেঁয়াজ খাবেন না যেসব কারণে।

পেঁয়াজ কাটতে গিয়ে কান্না আসে না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর হতে পারে, কিন্তু বিভিন্ন গবেষণা ধারণা দিচ্ছে যে ডায়াবেটিস, হাঁপানি ও উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধে পেঁয়াজ সহায়ক হতে পারে। প্রাকৃতিক প্রতিষেধক হিসেবে পেঁয়াজের জনপ্রিয়তা এত বেশি যে, এটিকে মিরাকল ফুড বা বিস্ময়কর খাবার বলা যেতে পারে।

কিন্তু পেঁয়াজের উপকারিতা সত্ত্বেও এ খাবার বেশি পরিমাণে খেলে কিছু সমস্যা হতে পারে। এ প্রতিবেদনে পেঁয়াজ বেশি খাওয়ার কিছু কুফল আলোচনা করা হলো।

অ্যালার্জি: পেঁয়াজের প্রতি অ্যালার্জি থাকলে আপনার ত্বকে এ খাবারের ফলে চুলকানিযুক্ত লাল র‍্যাশ ওঠতে পারে এবং সেইসঙ্গে চোখে লালতা ও চুলকানি হতে পারে। বিভিন্ন গবেষণা প্রতিবেদনে পেঁয়াজ সংশ্লিষ্ট মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কথা পাওয়া যায়নি, কিন্তু পেঁয়াজ খাওয়ার পর আপনার ত্বক লাল হলে, মুখে ফোলা বা অস্বস্তিকর অনুভূতি হলে, শ্বাস নিতে কষ্ট হলে অথবা রক্তচাপ কমে গেলে এটি অ্যানাফাইল্যাক্টিক রিয়্যাকশনের লক্ষণ হতে পারে। এক্ষেত্রে জরুরি মেডিক্যাল চিকিৎসা নেয়ার প্রয়োজন হয়।

আন্ত্রিক গ্যাস: যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ অনুসারে, মানুষের পাকস্থলি বেশিরভাগ সুগার হজম করতে পারে না, যা অবশ্যই অন্ত্রে চলে আসে- অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়া একটি প্রক্রিয়ায় এসব সুগারকে ভাঙে, যার ফলে গ্যাস উৎপন্ন হয়। পেঁয়াজে প্রকৃতিগতভাবে ফ্রুকটোজ রয়েছে, যা কিছু লোকের ক্ষেত্রে আন্ত্রিক গ্যাসের উৎস হতে পারে। পেঁয়াজ সংশ্লিষ্ট গ্যাসের লক্ষণ হিসেবে পেট ফেঁপে যেতে পারে, পেটে অস্বস্তি হতে পারে, ঘনঘন বাতকর্ম হতে পারে ও মুখ থেকে দুর্গন্ধময় শ্বাস বের হতে পারে। আপনার পেঁয়াজের প্রতি ফুড ইনটলারেন্স থাকলে এসব উপসর্গ আরো খারাপ হতে পারে। ফুড ইনটলারেন্স হচ্ছে পরিপাকতন্ত্র কর্তৃক কিছু নির্দিষ্ট খাবার হজমের অক্ষমতা। ফুড ইনটলারেন্স জীবননাশক না হলেও এটি বমিভাব, বমি ও ডায়রিয়ার কারণ হতে পারে।

বুকজ্বালা: বুকজ্বালা হচ্ছে এমন একটি অবস্থা যেখানে পাকস্থলির অ্যাসিড খাদ্যনালিতে ওঠে আসে ও বুকে জ্বালাপোড়ার অনুভূতি সৃষ্টি করে। আমেরিকান জার্নাল অব গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজিতে প্রকাশিত একটি গবেষণা বলছে যে, বুকজ্বালা নেই এমন লোকেরা পেঁয়াজ খেলে সমস্যা হওয়ার কথা নয়, কিন্তু দীর্ঘস্থায়ী বুকজ্বালা বা গ্যাস্ট্রিক রিফ্লাক্স ডিজিজের লোকেরা পেঁয়াজ খেলে উপসর্গের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে। এছাড়া পেঁয়াজ খাওয়ার পর গর্ভবতী নারীদের বুকে জ্বালাপোড়া অনুভব হতে পারে। তাই যারা পেঁয়াজ খাওয়ার পর বুকে অস্বস্তি অনুভব করেন তাদের পেঁয়াজের ব্যবহার সীমিত করা উচিত।

ড্রাগ ইন্টার‍্যাকশন: আপনাকে আশ্বস্ত করা হচ্ছে যে পেঁয়াজ বেশিরভাগ ওষুধের কার্যকারিতায় প্রভাব ফেলে না। কিন্তু পেঁয়াজ পাতায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন কে রয়েছে বলে কিছু ওষুধ সেবনকালে এর ব্যবহার সীমিত করতে হবে। আপনি প্রচুর পরিমাণে পেঁয়াজ পাতা খেলে এর ভিটামিন কে কিছু রক্ত পাতলাকারী ওষুধের কার্যকারিতা কমাতে পারে, যেমন- কৌমাডিন। যারা রক্ত পাতলাকারী ওষুধ সেবন করেন তাদের খাবার সংক্রান্ত যেকোনো পরিবর্তনের পূর্বে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করা উচিত।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.