দেশে বেড়েছে কোটিপতির সংখ্যা

দেশে বেড়েছে কোটিপতির সংখ্যা।

দেশে কোটিপতির সংখ্যা বেড়েছে। বছরে গড়ে কোটিপতি বেড়েছে ১২ হাজার ২৩৫ জন। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যানে গত দশ বছরে কোটিপতির সংখ্যা বেড়েছে চার গুণ। দেশের ব্যাংকিং খাতে বর্তমানে কোটিপতির সংখ্যা এক লাখ ৪৫ হাজারেরও বেশি। অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ পরিসংখ্যান থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশে প্রতিটি সরকারের আমলেই কোটিপতির সংখ্যা বেড়েছে। প্রতিবারই সরকারের পালাবদলের সঙ্গে সঙ্গে নব্য কোটিপতির উত্থান হয়েছে।  তবে একক বছর হিসাবে সবচেয়ে বেশি কোটিপতি বেড়েছে ২০১০ সালে। ওই বছর কোটিপতি বেড়েছে ১৩ হাজার ৮৯২ জন।  অন্যদিকে ব্যাংক খাতে কোটিপতি ঋণগ্রহীতার সংখ্যা কোটিপতি আমানতকারীর তুলনায় সব সময়েই বেশি।  এর একমাত্র ব্যতিক্রম ২০১৩ সালে। আলোচ্য বছরে কোটি টাকার অধিক ঋণগ্রহীতার চেয়ে আমানতকারী বেশি ছিল।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, চলতি বছরের গত জুন শেষে ব্যাংক খাতে এক কোটি টাকার অধিক আমানতকারী ও ঋণগ্রহীতার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৭৬ হাজার ৭৫৬ জন। এর মধ্যে আমানতকারী ৮০ হাজার ৩৯৬ জন এবং ঋণগ্রহীতার সংখ্য ৯৬ হাজার ৩৬০ জন।  অন্যদিকে ২০০৮ সালের ডিসেম্বরের শেষে ব্যাংক খাতে কোটিপতির সংখ্যা ছিল ৪৪ হাজার ৩৬৯ জন।  এর মধ্যে আমানতকারী ১৯  হাজার ১৬৩ জন এবং ঋণগ্রহীতা ২৫ হাজার ২০৬ জন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৮ সালের ডিসেম্বর শেষে ব্যাংক খাতে কোটিপতির সংখ্যা ছিল এক লাখ ৬৬ হাজার ৭২৮ জন। এর মধ্যে আমানতকারী ৭৫ হাজার ৫৬৩ জন এবং ঋণগ্রহীতা ছিল ৯১ হাজার ১৬৫ জন।  চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে কোটিপতির সংখ্যা বেড়েছে ১০ হাজার ২৮ জন। এর মধ্যে আমানতকারী বেড়েছে চার হাজার ৮৩৩ জন এবং ঋণগ্রহীতা বেড়েছে পাঁচ হাজার ১৯৫ জন।

পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০০৮ সালের ডিসেম্বর শেষে ব্যাংক খাতে কোটিপতির সংখ্যা ছিল ৪৪ হাজার ৩৬৯ জন। এর মধ্যে আমানতকারী ১৯ হাজার ১৬৩ ও ঋণগ্রহীতা ২৫ হাজার ২০৬ জন।  আর ২০১৮ সালের ডিসেম্বর শেষে দেশের ব্যাংক খাতে কোটিপতির সংখ্যা দাঁড়ায় এক লাখ ৬৬ হাজার ৭২৮ জন।  সে হিসাবে গত এক দশকে দেশে কোটিপতির সংখ্যা বেড়েছে এক লাখ ২২ হাজার ৩৫৯ জন।  অর্থাৎ আলোচ্য সময়ে কোটিপতি বেড়েছে প্রায় চার গুণ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য মতে, ২০০৯-২০১৩ বছর শেষে ব্যাংক খাতে কোটিপতি ছিল ৯৮ হাজার ৫৯১ জন। এর মধ্যে আমানতকারী ৪৯ হাজার ৬৪০ ও ঋণগ্রহীতা ৪৮ হাজার ৯৫১ জন।  আলোচ্য সময়ে কোটিপতি বেড়েছে ৫৪ হাজার ২২২ জন।  অন্যদিকে ২০১৪-২০১৮ শেষে ব্যাংক খাতে কোটিপতির সংখ্যা দাঁড়ায় এক লাখ ৬৬ হাজার ৭২৮ জন। আমানতকারী ৭৫ হাজার ৫৬৩ জন ও ঋণগ্রহীতা ৯১ হাজার ১৬৫ জন। এ সময়ে কোটিপতির সংখ্যা বেড়েছে ৬৮ হাজার ১৩৭ জন।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রমতে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক সব তফসিলি ব্যাংকের কাছ থেকে প্রাপ্ত হিসাবের ভিত্তিতে যে প্রতিবেদন তৈরি করে সেটাই কোটিপতির সংখ্যা নির্ধারণে নির্ভরযোগ্য ভিত্তি।  তবে অবৈধ বিত্তের মালিকরা স্বনামে-বেনামে একাধিক অ্যাকাউন্টে কিংবা নিজস্ব কোনো ব্যবস্থায় টাকা রাখতে পারেন।  তাদের শনাক্ত করা কঠিন।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.