ফের লোকসানের আশঙ্কা বিমানের

Biman-Bangladesh-Airlinesযাত্রীর অভাব ও লোকসানি বিবেচনায় বন্ধ হয়ে যাওয়া ঢাকা-রোম-ঢাকা রুট ফের চালুর চেষ্টা-তদবির চলছে বিভিন্ন মহল থেকে। এর ফলে দীর্ঘদিন পর ঘুরে দাঁড়ানো বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস ফের লোকসানের ধারায় ধাবিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বেশ কিছু লোকসানি রুট চালু থাকার কারণে বছরের পর বছর বিপুল অঙ্কের ভর্তুকি গুনতে হয়েছে বিমানকে। তাই লোকসানি রুট পর্যায়ক্রমে বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয় বিমানের পরিচালন বিভাগ। পাশাপাশি সম্ভাব্যতা যাচাই করে চালু করছে নতুন রুট। এ ধরনের নানা উদ্যোগ আর সংস্কারের ফলে দীর্ঘদিন পর ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। কিন্তু এ অবস্থায় আবার লোকসানি রুট চালু করতে বিভিন্ন মহল থেকে চাপ আসছে। এর মধ্যে ঢাকা-রোম রুট অন্যতম। যদিও যাত্রীর অভাবে এ রুটটি বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছিল বিমান কর্তৃপক্ষ।

জানা গেছে, ১৯৮১ সালে ঢাকা-রোম-ঢাকা রুটে ফ্লাইট শুরু করে বিমান। তখন এ রুটে সপ্তাহে দুটি করে ফ্লাইট চলাচল করত। যাত্রীর অভাবে এক দশক পর ফ্লাইটের সংখ্যা কমিয়ে সপ্তাহে একটি করা হয়। পরবর্তীতে ২০১৪ সালের এপ্রিলে ফ্লাইট শুরু হয় রোমের সঙ্গে ফ্রাংকফুর্ট রুট যুক্ত করে। তখন ফ্লাইটপ্রতি লোকসান হতো ২ কোটি ১০ লাখ টাকা। এর পর লোকসানের কারণ দেখিয়ে ২০১৫ সালের ৭ এপ্রিল বন্ধ করে দেওয়া হয় ঢাকা-রোম রুট। দীর্ঘদিন ফ্লাইট না থাকায় রোম স্টেশনটিও এখন বন্ধ করার চিন্তা রয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, কোনো প্রবাসী মারা গেলে বিনামূল্যে লাশ দেশে আনে জাতীয় পতাকাবাহী এয়ারলাইনস বিমান। মূলত এই সুযোগকে কাজে লাগাতে ফের ইতালি রুটে ফ্লাইট চালু করতে তদবির চালাচ্ছে বিভিন্ন মহল। কিন্তু নতুন করে আবার ঢাকা-রোম ফ্লাইট চালু হলে লোকসানের মাত্রা অস্বাভাবিক হারে বাড়ার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এ বিষয়ে বিমানের চেয়ারম্যান এয়ার মার্শাল (অব.) ইনামুল বারী বলেন, এটা ঠিক, ইতালি ফ্লাইট চালুর ব্যাপারে অনেকে বলছেন। আসলে লোকসানের কারণে এ রুটটি বন্ধ করা হয়েছিল। তবে যাত্রী পাওয়া যাবে কিনা যাচাই করে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

জানা গেছে, বর্তমানে ১৫টি আন্তর্জাতিক গন্তব্যে এবং ৭টি অভ্যন্তরীণ রুটে চলাচল করছে বিমান। লোকসানি রুট, ব্যবস্থাপনার দুর্বলতাসহ নানা কারণে ২০০৯-১০ অর্থবছর থেকে রাষ্ট্রীয় এ প্রতিষ্ঠানটিতে টানা লোকসান শুরু হয়। ওই অর্থবছর ৮০ কোটি, ২০১০-১১ অর্থবছরে ১৯১ কোটি, ২০১১-১২ অর্থবছরে ৬০০ কোটি ও ২০১২-১৩ অর্থবছরে ২১৪ কোটি টাকা লোকসান দেয় বিমান। এ ছাড়া ২০১৩-১৪ অর্থবছরে বিমানের লোকসান হয় ১৯৮ কোটি ৮০ লাখ টাকা। তবে গত দুই অর্থবছরে মুনাফা করতে সমর্থ হয় বিমান। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ৩২৪ কোটি ও ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ২৭৬ কোটি টাকা মুনাফা করে রাষ্ট্রীয় উড়োজাহাজ পরিবহন সংস্থাটি।

গত অর্থবছরে বিমান যাত্রী বহন করেছে ২৩ লাখ ১৮ হাজার, যা আগের অর্থবছরে ছিল ২০ লাখ ২০ হাজার। কার্গো পরিবহন খাতে ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরে ৪০ হাজার ৯শ মেট্রিক টন মালামাল পরিবহন করেছে বিমান। এটি আগের অর্থবছরের চেয়ে ৭ শতাংশ কম। তবে গত বছরের ৮ মার্চ থেকে যুক্তরাজ্য সরকার কার্গো পরিবহনে নিষেধাজ্ঞা জারির করার কারণে কার্গো পরিবহন তুলনামূলক কিছুটা কম হয়েছে।

সূত্রঃআমাদের সময়

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.