খুলনা পাসপোর্ট অফিসে দালাল চক্রের উৎপাত

172 (1)খুলনা বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিসে দালাল চক্রের দৌরাত্ম্য সাধারণ মানুষের হয়রানি নিত্যসঙ্গী। আবেদনপত্র ও ছবি তোলার দুটি কক্ষে শত শত মানুষের ভিড় থাকলেও নিয়ম মেনে কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে না। মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) দেয়ার ক্ষেত্রেও রয়েছে অযথা হয়রানির অভিযোগ। প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আসা পাসপোর্ট আবেদনকারীদের বেশিরভাগ ধরা পড়ছেন দালাল চক্রের খপ্পরে। ছবি তুলতে দালালদের দিতে হচ্ছে জনপ্রতি ১৫শ’ টাকা। পুলিশ ক্লিয়ারেন্সে ৬শ’ টাকা। নগরীর নূরনগরে অবস্থিত অফিসটির ভেতরে দালালরা প্রবেশ করতে না পারলেও গেটের বাইরে থেকেই সব কাজ পরিচালনা করছে একাধিক দালাল চক্র। প্রথম শ্রেণীর গেজেটেড কর্মকর্তার সত্যায়িত স্বাক্ষর পাওয়া যাচ্ছে টাকার বিনিময়ে। মাঝে মধ্যে এসব দালাল চক্রের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হলেও সপ্তাহ বা মাস খানেকের মধ্যে তারা আবার বের হয়ে আসছে।
অফিসের পরিচালকের দাবি, তাদের ভবনের মধ্যে কোনো দালাল প্রবেশ করতে পারে না। তবে গেটের বাইরে অনেকেই এ কাজ করে। দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে এবং পাসপোর্টের সেবা বৃদ্ধির জন্য অফিসের বিভিন্ন স্থানে ১০টি ক্যামেরা স্থাপন করা হবে।
দালাল : এ ঘটনার পর বুধবার বিকাল ৪টা ১৭ মিনিট থেকে মুঠোফোনে ০১৭১৪৬৩৩০৭৩ মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করা হয় স্থানীয় এক প্রভাবশালী দালালের সঙ্গে। সব বিষয় দালালকে জানানোর পর তিনি বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে আগে যোগাযোগ না করলে এমনই হয়। আপনি কাল (আজ বৃহস্পতিবার) সকালে অফিসের বিপরীত পাশে এসে আমাকে ফোন দেবেন। ভেতরে আমাদের লোকজন আছে। আগামীকালই (আজ) আপনাদের ছবি তুলে দেবে এবং পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের সব দায়িত্ব আমার। দুটি কাজ করতে জনপ্রতি দুই হাজার টাকা দিতে হবে। আর যদি শুধু ছবি তুলতে চান তাহলে জনপ্রতি পনেরো শ’ টাকা দিলে হবে।’
হয়রানি : বুধবার বেলা ১টায় নগরীর গল্লামারী এলাকার মাহিনুর বেগম এমআরপি পাসপোর্ট আনতে যান ওই অফিসে। চলতি মাসের ১৪ তারিখে তার পাসপোর্ট ডেলিভারি দেয়ার কথা থাকলেও তিনি এ পর্যন্ত চারবার অফিসে গিয়ে খালি হাতে ফিরে এসেছেন। পাসপোর্ট অফিসের দোতলার এক কর্মকর্তা মাহিনুরকে জানিয়েছেন তার পাসপোর্ট হয়ে গেছে। কিন্তু অজানা কারণে নিচের তলার ডেলিভারি কক্ষ থেকে তার পাসপোর্ট দেয়া হচ্ছে না। এ নিয়ে কিছুটা হট্টগোল করেন তিনি। এরপর তিনি বিষয়টি জানান অফিসের পরিচালককে। তেমন কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে পরিচালক মাহিনুরকে বলেন, ‘পাসপোর্টটি ঢাকায় প্রিন্ট হয়। এরপর পোস্ট অফিসের মাধ্যমে এখানে আসে। আপনি পরে যোগাযোগ করেন।’ এরপর মাহিনুর আবার দোতলার সেই কর্মকর্তার কাছে যান। এ সময় কর্মকর্তা তাকে বলেন, “আপনি নিচে গিয়ে হট্টগোল করেছেন এ জন্য ‘সরি’ বলেন। এরপর আপনার পাসপোর্ট দেয়া হবে।”

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.