সোনা চোরাচালান রোধে এবার যৌথ টাস্কফোর্স

task-force_goldএভিয়েশন নিউজ: সীমান্ত ও বিমানের মাধ্যমে সোনা চোরাচালান রোধে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও সংস্থার সমন্বয়ে এবার যৌথ টাস্কফোর্স গঠন করা হচ্ছে। গতকাল এনবিআরের সম্মেলন কক্ষে বিমান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক শেষে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান এসব কথা জানান।

তিনি বলেন, সীমান্ত পথে ও বিমানে ল্যান্ডিংয়ের মাধ্যমে সোনা, বিদেশি মুদ্রা ও বিভিন্ন পণ্য চোরাচালান ভয়াবহ পর্যায়ে দাঁড়িয়েছে। কাস্টমস এ ব্যাপারে উদ্যোগ নিলেও যথার্থ ভূমিকা রাখতে পারছে না। তাই আমরা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয় ও সংস্থার সঙ্গে বৈঠক করে কর্মপন্থা ঠিক করব। এর ধারাবাহিকতায় বিমানের সঙ্গে এ বৈঠক।

নজিবুর রহমান বলেন, চোরাচালান একটি বড় চক্র দ্বারা পরিচালিত হয়। কারও একার পক্ষে এদের নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। কামস্টসে চোরাচালান রোধে বিমান ও বন্দর আমাদের সব সময়ই সহযোগিতা করে। তাদের সহযোগিতায় এই চোরাচালান প্রতিরোধে আরও কঠোর হওয়ার চিন্তা করছে এনবিআর।

এ লক্ষ্যে বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ বিমান ও এনবিআর যৌথ টাস্কফোর্স গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। টাস্কফোর্স গঠনের পর সবার সঙ্গে বৈঠক করে এর কর্মপরিধি নির্ধারণ করা হবে। চোরাকারবারিদের ধরতে পুলিশসহ গোয়েন্দা বাহিনীর সহায়তা নেবে এ টাস্কফোর্স। একই সঙ্গে নতুন কৌশলে কাজ করবে এনবিআরের শুল্ক ও গোয়েন্দা অধিদফতর।

এনবিআর চেয়ারম্যান আরও বলেন, পুরনো সব মামলা নিষ্পত্তির উদ্যোগ নিয়েছে এনবিআর। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ১ কোটি টাকার বেশি কর ফাঁকি দেওয়া সব মামলা নিষ্পত্তির জন্য অ্যাটর্নি জেনারেলের সঙ্গে আলোচনা করে একটি কমিটি গঠন করা হবে। এ কমিটিতে এনবিআরের কমিশনারদের রাখা হবে। কমিশনাররা সরাসরি মামলাগুলো দেখভাল করবেন।

বৈঠকের বিষয়ে বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) কাইল হেইড বলেন, এনবিআর ও বিমান সহযোগী প্রতিষ্ঠান। চোরাচালান রোধে আমরা যৌথভাবে কাজ করতে আগ্রহী। কাস্টমসের অপরাধ রোধে বিমানের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।

তিনি আরও বলেন, চোরাচালান একটি বড় অপরাধ। এর কারণে সরকার বড় ধরনের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয় বলে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। তাই এ ধরনের অপরাধ রোধে আমরা কাস্টমস বিভাগের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করব। এদিকে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের এক প্রতিবেদন বলা হয়েছে, শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ডিপারচার ওয়েটিং লাউঞ্জে সর্বত্র সিসিটিভি ক্যামেরা না থাকায় বিদেশ থেকে আগত সোনা বিমান হতে নামার পর হাতবদল হয়ে থাকে।

পুরো বিমানবন্দরের মাত্র কয়েক গজ জায়গা আছে যেখানে সোনার চোরাচালান হাতবদল হয়ে থাকে। সেখানে কোনো ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই। এই সুযোগটা নেওয়া হয়েছে। দীর্ঘ তদন্তের পর জায়গাটি খুঁজে বের করে নজরদারি বাড়ানোর পাশাপাশি সিসিটিভি বসালে চোরাচালান অনেক কমে যাবে।

এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, ২০০৯-১০ অর্থবছরে ১ কোটি ১১ লাখ টাকার ৪ কেজি ৩০০ গ্রাম সোনা জব্দ হয়। এর পরের ২০১০-১১ অর্থবছরে ১১ লাখ টাকা মূল্যের ৩৫০ গ্রাম, ২০১১-১২ অর্থবছরে ৫১ লাখ টাকা মূল্যের ১ কেজি ২১০ গ্রাম সোনা জব্দ হয়। ২০১২-১৩ অর্থবছরে আড়াই কোটি টাকা মূল্যের ৫ কেজি ৫৬০ গ্রাম, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ৫৬৫ কেজি ৭৫০ গ্রাম সোনা জব্দ করা হয়। যার মূল্য প্রায় ২৫৫ কোটি ৮১ লাখ টাকা। বৈঠকে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খানসহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.