শ্রমিকদের দিয়ে দৈনিক ১৮ ঘণ্টা কাজ করাচ্ছে কাতার

base_1491492574-555২০২২ সালের বিশ্বকাপ ফুটবল উপলক্ষে কাতারে স্টেডিয়ামের অবকাঠামোগত উন্নয়নের কাজ চলছে। দেশটিতে স্টেডিয়ামের কাজে নিয়োজিত অভিবাসী শ্রমিকরা দৈনিক ১৮ ঘণ্টা করে কাজ করছেন; যা অনুমোদিত শ্রম আইনের দ্বিগুণেরও বেশি সময়। কর্মপরিবেশ নিয়ে কাজ করা লন্ডনভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ইমপ্যাক্টের বুধবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। খবর এএফপি।
পাঁচটি ঠিকাদারি কোম্পানির ওপর পরিচালিত সমীক্ষার ভিত্তিতে ইমপ্যাক্টের এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়। ইমপ্যাক্টের সমীক্ষায় দেখা গেছে, কোম্পানিগুলো তাদের কর্মীদের সাপ্তাহিক ছুটিও দেয় না। সবচেয়ে ভয়াবহ বিষয় হলো, কোম্পানিগুলোর কিছু শ্রমিক টানা ১৪৮ দিন কাজ করেছেন। প্রায় পাঁচ মাসে তারা একদিনও ছুটি পাননি। ইমপ্যাক্টের প্রতিবেদনে উঠে আসা সবচেয়ে খারাপ কেস হলো, কিছু শ্রমিক সপ্তাহে ছয়দিন দৈনিক ১৮ ঘণ্টা করে কাজ করছেন।
কাতারের আইন অনুযায়ী শ্রমিকদের দৈনিক কর্মঘণ্টা ৮। সে হিসাবে শ্রমিকদের দিয়ে সপ্তাহে ৪৮ ঘণ্টা কাজ করানোর বিধান রয়েছে। এছাড়া শ্রমিকরা একদিনে অতিরিক্ত ২ ঘণ্টা কাজ করতে পারবেন। একই সঙ্গে প্রতি সপ্তাহে অন্তত একদিন ছুটি কাটাতে পারবেন তারা।
উপসাগরীয় দেশটিতে কাজ করার ফি পরিশোধ করতে গিয়ে অভিবাসী শ্রমিকরা ঋণসহ বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হন। ইমপ্যাক্টের প্রতিবেদনে সে বিষয়টিও উঠে এসেছে। ২৫৩ জন অভিবাসী শ্রমিকের সাক্ষাত্কার নিয়ে ইমপ্যাক্টের প্রতিবেদন তৈরি করা হয়। তাদের মধ্যে প্রায় ৮০ শতাংশ শ্রমিক জানিয়েছেন, কাতারে কাজ করার জন্য তারা নিয়োগ ফি পরিশোধ করেছেন। বর্তমানে কাতারে বিশ্বকাপ প্রকল্পে প্রায় ২০০ ঠিকাদার অথবা উপঠিকাদারের অধীনে ৯ হাজার ৫৬৬ শ্রমিক কর্মরত বলে ইমপ্যাক্টের প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে।
প্রতিবেদনে একজন ঠিকাদারের বিষয়ে তুলে ধরা হয়, যার অধীনে নিয়োজিত ৮৫ শতাংশ শ্রমিক চাকরিচ্যুত হওয়ার আশঙ্কায় তাদের কল্যাণমূলক বিষয়াবলি বৃদ্ধির দাবি জানাতে ভয় পান। গত বছরের অক্টোবরে ‘ধর্মঘটে উসকানি’ দেয়ার অভিযোগে ওই ঠিকাদারের অধীনে নিয়োজিত দুই শ্রমিককে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। এ কারণে শ্রমিকদের জন্য শক্তিশালী কণ্ঠস্বর তৈরি এবং ব্যবস্থাপনা দক্ষতা শক্তিশালীকরণে সেখানে ঠিকাদারদের জন্য আইন করার সুপারিশ জানিয়েছে ইমপ্যাক্ট।
উল্লেখ্য, বিশ্বকাপের প্রধান অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্পে কাতার প্রতি সপ্তাহে ৫০ কোটি ডলার ব্যয় করছে। ২০২২ সালের বিশ্বকাপের প্রস্তুতিতে ২০ হাজার কোটি ডলার ব্যয় করবে দেশটি।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.