ভেনেজুয়েলা সংকটের জন্য রাশিয়া, কিউবাকে দুষলেন যুক্তরাষ্ট্রে পম্পেও

ভেনেজুয়েলা সংকটের জন্য রাশিয়া, কিউবাকে দুষলেন যুক্তরাষ্ট্রে পম্পেও।

ভেনেজুয়েলা সংকটের জন্য রাশিয়া ও কিউবাকে দুষলেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও। সোমবার মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ বিষয়ে কথা বলেন। মাইক পম্পেও বলেন, রাশিয়া ও কিউবা ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোকে সমর্থন দিয়ে দেশটিতে রাজনৈতিক সংকট তৈরি করছে। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম রয়টার্স।

মাইক পম্পেওনির্বাচনি কারচুপির অভিযোগ আর অর্থনৈতিক সংকট ভেনেজুয়েলার জনগণকে তাড়িত করেছে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে। বিক্ষোভের সুযোগে গত ২৩ জানুয়ারি নিজেকে অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করেন বিরোধীদলীয় নেতা হুয়ান গুইদো। এরপরই তাকে স্বীকৃতি দেয় যুক্তরাষ্ট্রসহ ৫০টিরও বেশি দেশ। এরপর দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি শোডাউনের মধ্যেই গত ৮ মার্চ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে ভেনেজুয়েলার অর্ধেকেরও বেশি এলাকা। দেশটির ২৩টির মধ্যে ১৮টি রাজ্যেই অন্ধকারে কাটাতে হচ্ছে বাসিন্দাদের। কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, সরকারবিরোধীরা এই বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে। এর মধ্যেই সোমবার ভেনেজুয়েলা সংকটের জন্য রাশিয়া, কিউবাকে দুষলেন পম্পেও।

সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ভেনেজুয়েলা থেকে তেল না কিনতে ভারতের প্রতি আহ্বান জানান পম্পেও। এমন সময়ে তিনি এ আহ্বান জানালেন যখন ভেনেজুয়েলাকে তেল বিক্রিতে সহায়তার অভিযোগে রাশিয়ার একটি ব্যাংকের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয়।

এদিকে ভেনেজুয়েলায় গত বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া ভয়াবহ বিদ্যুৎ বিভ্রাটের ফলে জনগণের নাভিশ্বাস উঠেছে। বিদ্যুৎ না থাকায় মোবাইল ফোন, ইন্টারনেট, ব্যাংক, ক্রেডিট কার্ডের মতো বিষয়গুলোও ব্যবহার করা দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে। অব্যাহত বিদ্যুৎ বিভ্রাটে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন।

বিদ্যুৎবিহীন অন্ধকারে বাড়ছে লুটপাটের মতো ঘটনা। বন্ধ হয়ে গেছে সুপার মার্কেটগুলো। সংবাদমাধ্যমগুলোর কাছে নিজেদের হতাশার কথা জানিয়েছেন দেশটির নাগরিকরা। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সোমবার দেশজুড়ে স্কুল ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত ভেনেজুয়েলার স্বঘোষিত প্রেসিডেন্ট হুয়ান গুইদো’র দাবি, বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে এ পর্যন্ত অন্তত ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোকে দায়ী করেছেন গুইদো।

ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো এই বিদ্যুৎ বিভ্রাটের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের উসকানিকে দায়ী করেছেন। তার দাবি, শনিবার যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত সরকারবিরোধীরা রাষ্ট্রীয় বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে তাণ্ডব চালিয়ে সেটি বিনষ্ট করে দিয়েছে।

টুইটারে দেওয়া এক পোস্টে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও বলেছেন, খাবার নেই, ওষুধ নেই, এখন বিদ্যুৎও নেই। তারপর মাদুরোও থাকবে না। আর হুয়ান গুইদো’র দাবি, মাদুরো ক্ষমতা থেকে অপসারিত হলে আলো ফিরবে। এরপর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মাদুরোর পতন না হওয়ার জন্য রাশিয়া ও কিউবাকে দোষারোপ করেন তিনি।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.