বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ঘাড়ে ঋণ ১০ হাজার কোটি টাকা

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ঘাড়ে ঋণ ১০ হাজার কোটি টাকা।

প্রতিষ্ঠার ৪৭ বছরে রাষ্ট্রীয় উড়োজাহাজ সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের যাত্রী ও সেবার মান বাড়লেও কমেছে রুট। ৫২টি দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের বিমান চলাচল চুক্তি থাকলেও বর্তমানে মাত্র ১৫টি আন্তর্জাতিক রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করছে সংস্থাটি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সঠিক পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনার দুর্বলতার কারণে কাঙ্ক্ষিত অবস্থানে যেতে পারেনি বিমান। তবে ২০১৯ সালে বহরে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির আরো দুটি ড্রিমলাইনারসহ চারটি উড়োজাহাজ যুক্ত হলে চারটি নতুন রুটে যাত্রার প্রত্যাশা বিমানের।

বিমানবাহিনী থেকে পাওয়া ডিসি-৩ উড়োজাহাজ দিয়ে ১৯৭২ সালের ৪ জানুয়ারি যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশে যাত্রা শুরু হয়েছিল বাংলাদেশ বিমানের। আশির দশক থেকে উড়োজাহাজ বাড়তে থাকলে পর্যায়ক্রমে এশিয়া, ইউরোপ ও আমেরিকার ২৬টি আন্তর্জাতিক গন্তব্যে পাখা মেলে বিমান। যদিও রাজনৈতিক বিবেচনায় ফ্লাইট পরিচালনা ও বেশি মূল্যে উড়োজাহাজ লিজ নেয়ায় ক্রমাগত লোকসানে বন্ধ হয়ে যায় অধিকাংশ রুট।

বহরে নতুন প্রযুক্তির উড়োজাহাজ সংযোজন করে চার বছর ধরে আবার লাভের ধারায় ফিরেছে সংস্থাটি। তবে সেবার পরিসর বাড়াতে নতুন রুট বাড়ানোর পাশাপাশি বিদেশি এয়ারলাইন্সের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে বিমানের বোর্ড সদস্যদের কার্যকর ভূমিকা রাখা প্রয়োজন বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

বাংলাদেশ বিমান সাবেক পরিচালক নাফীস ইমতিয়ায উদ্দিন বলেন, বিমানের গন্তব্য বাড়াতে হবে, কার্গো অপারেশন তৈরি করতে হবে। চায়না ও ইউরোপিয়ান নেটওয়ার্কিং বাড়িয়ে অন্যান্য এয়ারলাইন্স ও সরকারি এয়ারলাইন্সের সুবিধার তারতম্যের দিকে বিমান বোর্ডের খেয়াল রাখতে হবে।

নতুন বছরে চীনের গুয়াংজু ও শ্রীলঙ্কার কলম্বোসহ নতুন চারটি ও বন্ধ হয়ে যাওয়া বেশ কিছু রুটে ফ্লাইট চালুর কথা জানায় বিমান।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের জনসংযোগ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক শাকিল মেরাজ বলেন, এই চার বিমানবহর যুক্ত করার ফলে আমাদের ফ্লাইট সক্ষমতা বাড়বে ও একই সাথে এর মধ্য দিয়ে বিমানের নেটওয়ার্ক বাড়ানোর যে পরিকল্পনা তা কার্যকর করা শুরু হবে।

বর্তমানে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার ঋণের ভারে ভারাক্রান্ত বিমান। এই প্রেক্ষাপটে ক্রমবর্ধমান যাত্রী চাহিদার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে বহরে উড়োজাহাজ বাড়াতে সরকার কাছে মূলধন চেয়েছে সংস্থাটি।

শাকিল মেরাজ আরো বলেন, ক্রমবর্ধমান যাত্রী চাহিদার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে বহরে উড়োজাহাজ বাড়াতে গেলে ঋণের পরিমাণ বাড়ছে। ঋণের অনুপাত সহনীয় মাত্রায় রাখার জন্য যে পরিমাণ মূলধন প্রয়োজন তার জন্য আমরা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে অবহিত করেছি।

৪৭ বছরে মোট ৫ কোটি ৭০ লাখ যাত্রী পরিবহন করেছে বিমান। এক সময়ে আন্তর্জাতিক রুটে মোট যাত্রীর ৫০ শতাংশ বাংলাদেশ বিমান পরিবহন করলেও বর্তমানে করছে ২৩ শতাংশ যাত্রী।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.