ফেসবুক বিনোদন না মানসিক চাপ?

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের মধ্যে ফেসবুক খুবই জনপ্রিয়। ফেসবুক শুধু যোগাযোগের মাধ্যমই না। তা এখন নিউজ জানা ও বিনোদনের মাধ্যম। তবে সব সময় কি ফেসবুক বিনোদনের মাধ্যম? ফেসবুকের কারণে অনেক সময় আপনার মানসিক চাপও বাড়াতে পারে বলে মনে করে মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা।

মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা বলেন, ফেসবুক শুধু বিনোদনের মাধ্যম না; তা অনেক ক্ষেত্রে ভয়ের কারণও হতে পারে। কারণ ফেসবুকে আমরা অনেক সময় মৃত ব্যক্তির ছবি দেখি। যেমন পুরান ঢাকায় আগুনের ঘটনায় আমরা যেসব ছবি ফেসবুক ভেসে বেড়াতে দেখেছি তা অনেক মানুষের মানসিক চাপ বাড়াতে পারে। কারণ ভয়ানক কোনো কিছু দেখলে অনেক সময় রাতে আপনি তা স্বপ্নে দেখতে পারেন অথবা ভয় পেতে পারেন। কারণ সব মানুষের ধারণক্ষমতা এক না। কারো মন বেশি নরম আবার অনেক মানুষ বেশি ভয় পায়। তাদের জন্য মৃত ব্যক্তির ছবি ভয়ানক। যা তার মানসিক চাপ সৃষ্টি করতে পারে।

এ বিষয়ে মনোরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. মোহিত কামাল যুগান্তরকে বলেন, ফেসবুক বিনোদনের মাধ্যম। তবে অনেক ক্ষেত্রে ফেসবুক মানসিক চাপ সৃষ্টি করতে পারে। যা আপনার মন ও শরীরের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।

ঢাকার চকবাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটার পর অনেক ভয়াবহ ছবি আমরা ফেসবুকে দেখেছি। বিশেষ করে এ ব্যাপারগুলোতে শিশুদের চোখ এড়ালে ভালো। ফেসবুকে ক্রমাগত ভয়ানক ছবি বা ভিডিও দেখলে তা মন ও শরীরের ওপর প্রভাব ফেলে। ফলে আপনি ভয় পেতে পারেন।

অনেক সময় দেখা যাবে আপনার ঘুম ভেঙে যাচ্ছে নানা দুঃস্বপ্নে। শরীর ও মনে একরকম অস্বস্তি দানা বেঁধে ওঠে।

তিনি বলেন, ফেসবুকে ছবি দেয়ার ক্ষেত্রে আমরা এমন কোনো ছবি দেবে না যা দেখলে আমরা ভয় পাই। এসব বিষয় আমাদের নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

তবে ফেসবুক বিনোদন বটে। কারণ আমি নিজের ফেসবুক আইডি আছে। রোগী দেখার পর যখন আমি ক্লান্তবোধ করি তখন বন্ধুরে সঙ্গে চ্যাট করি। একটা কথা মনে রাখতে ফেসবুক ব্যবহারে তখনই ক্ষতি যদি আমরা ফেসবুকের অপব্যবহার করি।

তিনি বলেন, যেসব ব্যক্তিরা মানসিকভাবে নাজুক, অতিরিক্ত উদ্বিগ্ন, যারা কোনো মানসিক চাপ নিতে পারেন না, কোনো মানসিক সমস্যায় ভুগছেন। এ ধনের মানুষের জন্য ভয়ানক কোনো ছবি বা ভিডিও না দেখাই উত্তম।

যেসব সমস্যা হতে পারে

ঘুম আসতে দেরি হওয়া, ভেঙে ভেঙে ঘুম হওয়া, দুঃস্বপ্ন দেখা, বুক ধড়ফড়, বুকে চাপ বা অস্বস্তি, বুকব্যথা, শ্বাসকষ্ট, হাত–পা ঝিমঝিম করা, কানমাথা হঠাৎ গরম হয়ে যাওয়া, ঘাম ছেড়ে দেওয়া,মাথা ঘোরানো, হাঁটতে গিয়ে ভারসাম্যহীনতা বোধ করা, বমি বমি ভাব, পেটে গ্যাস বা চাপ, হঠাৎ হাত–পা ঠাণ্ডা বা অবশ হয়ে আসা, মুখ শুকিয়ে আসা, অস্থিরতা বোধ করা, হাত-পা কাঁপা, মাথাব্যথা, ঘাড়ব্যথা, শরীরের নানা জায়গায় দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা, ও মৃত্যুভীতি।

এসব সমস্যা হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.