দাম বেড়েছে ডিম পেঁয়াজ ও ব্রয়লার মুরগির

দাম বেড়েছে ডিম পেঁয়াজ ও ব্রয়লার মুরগির।

একাদশ জাতীয় নির্বাচনে পরিবহন সংকটের অজুহাতে রাজধানীতে হঠাৎ করে বাড়ে সবজির দাম। পরিবহন ব্যবস্থা স্বাভাবিক থাকায় এ সপ্তাহে তা কমতে শুরু করেছে। তবে সরবরাহ স্বাভাবিক থাকার পরও বাজারে বাড়ছে ডিম (ফার্ম) ও ব্রয়লার মুরগির দাম।

গত সপ্তাহে এক ডজন ডিম (১২ পিস) বিক্রি হয় ৯০-৯৫ টাকা, যা শুক্রবার বিক্রি হয় ১০০-১০৫ টাকা। আর গত সপ্তাহের মতো শুক্রবার উচ্চমূল্যে বিক্রি হচ্ছে ব্রয়লার মুরগি। তবে চাল, ডাল, ভোজ্যতেলসহ বেশির ভাগ নিত্যপণ্যের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। রাজধানীর কারওয়ান বাজার, হাতিরপুল কাঁচাবাজার ও নয়াবাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।

নয়াবাজারের ডিম বিক্রেতা মো. মমিনুল ইসলাম বলেন, পাইকারি বাজারে ডিমের সরবরাহ কম, দামও বেশি। তাই পাইকারিতে বেশি দামে কিনে খুচরা পর্যায়ে বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, পাইকারি বিক্রেতারা বলছেন, ডিমের চাহিদার তুলনায় সরবরাহ অনেক কম। খামারি পর্যায়ে ডিম উৎপাদনও কমে গেছে। এ জন্য খামারিদের কাছ থেকে বেশি দামে ডিম আনতে হচ্ছে। যে কারণে পাইকারি বাজারে ডিমের দাম বেড়েছে। যার প্রভাব পড়েছে খুচরা পর্যায়ে।

রাজধানীর বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বেগুনের দাম গত সপ্তাহের তুলনায় ১০ টাকা কমে শুক্রবার বিক্রি হয় ৪০ টাকায়। প্রতি কেজি শসা ১০ টাকা কমে বিক্রি হয় ৫০ টাকা। টমেটো ৪০ টাকা, বরবটির দাম গত সপ্তাহের মতো বিক্রি হয় ৮০ টাকা কেজি, আর সিম ৪০ টাকা কেজি।

এছাড়া প্রতি কেজি কাঁচামরিচ বিক্রি হয় ৬০ টাকা, পেঁপে ২০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, গাজর ৫০ টাকা, দেশি গাজর ৬০ টাকা, আলু ৩০ টাকা কেজি, প্রতি পিস বাঁধাকপি আকারভেদে বিক্রি হয় ২৫-৩৫ টাকা, ফুলকপি ২৫-৩০ টাকা। ধনিয়াপাতা এক আঁটি ১০ টাকা, কাঁচকলা হালি ৩০ টাকা, লাউ প্রতি পিস আকারভেদে বিক্রি হয় ৫০-৭০ টাকা।

এদিন ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে ১৩৫-১৪০ টাকা কেজি। তবে কারওয়ান বাজারে প্রতি কেজি মুরগি ১৩০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।

এ বাজারের মুরগি বিক্রেতা মো. জসিম বলেন, দুই সপ্তাহ ধরে ব্রয়লার মুরগির দাম বাড়ছে। তবে এ সপ্তাহে নতুন করে দাম না বাড়লেও উচ্চমূল্য স্থিতিশীল আছে। তিনি আরও বলেন, শহরে যতটা শীত পড়েছে, তার চেয়ে বেশি শীত পড়েছে গ্রাম অঞ্চলে। আর প্রচণ্ড শীতের কারণে খামারে মুরগির নানা ধরনের রোগবালাই হচ্ছে। ঠাণ্ডার কারণে মুরগি মারাও যাচ্ছে। যে কারণে খামারিরা মুরগির প্রয়োজনীয় ওষুধ কিনতে বেশি টাকা খরচ করছে। তাই তারা খামার থেকে মুরগি বেশি দামে বিক্রি করছে।

একই বাজারে নিত্যপণ্য কিনতে আসা মো. আবু জাফর বলেন, প্রতি সপ্তাহে কোনো না কোনো পণ্যের দাম বাড়ে। এ সপ্তাহে বাজারে এসে দেখি ডিম ও ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে।

তিনি বলেন, গরুর মাংসের দাম বেশি তাই সেখানে হাত দিতে পারি না। এখন যদি মুরগি ও ডিমের দাম বাড়ে তাহলে আমাদের মতো মধ্যবিত্তদের খাদ্যপণ্য কিনতে হিমশিম খেতে হবে। সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে আমদানি করা পেঁয়াজের দাম বেড়েছে।

শুক্রবার বাজার ও মানভেদে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয় ২৫ টাকা কেজি। আর আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হয় ২৫-৩০ টাকা, যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ২০-২৫ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে মাছের দাম কেজিতে ৫-১০ টাকা কমেছে। প্রতি কেজি পাঙ্গাশ ১২০-১৩০ টাকা বিক্রি হয়।

কৈ মাছ প্রতি কেজি ১৬০-২০০ টাকা বিক্রি হয়। তেলাপিয়া ১২০-১৬০ টাকা কেজি, রুই ২৮০-৩০০ টাকা কেজি, ট্যাংরা ৩৫০-৪৫০ টাকা কেজি এবং শিং ৩০০-৪০০ টাকা কেজি বিক্রি হয়।

চিংড়ি প্রতি কেজি বিক্রি হয় ৫০০-৯০০ টাকা। বাজারে পাকিস্তানি কক ২৩০-২৪০ টাকা, দেশি মুরগি ৪০০-৪৫০ টাকা কেজি বিক্রি হয়। গরুর মাংস প্রতি কেজি ৪৮০-৫০০ টাকা, খাসির মাংস ৭৮০ টাকা এবং ছাগলের মাংস ৬৫০ টাকা বিক্রি হয়।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.