জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনে রেকর্ড

taka20161025155504মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি অর্জনে রেকর্ড হয়েছে। ২০১৫-১৬ অর্থবছর শেষে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক ১১ শতাংশ। প্রাক্কলিত হিসাবে যা ৭.০৫ শতাংশ বলা হয়েছিল। কয়েক বছর ধরেই ৬ শতাংশের বৃত্তে আটকে ছিল দেশের প্রবৃদ্ধি। কিন্তু দেশের ইতিহাসে এই প্রথম জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশের ঘর অতিক্রম করেছে। এর মধ্য দিয়ে নতুন উচ্চতায় পৌঁছাল প্রবৃদ্ধির অর্জন। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর চূড়ান্ত হিসাবে এ তথ্য উঠে এসেছে।

মঙ্গলবার একনেক সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান। শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে এ ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়।

পরিসংখ্যান ব্যুরোর চূড়ান্ত হিসাব অনুসারে, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৭ দশমিক শূন্য ১১ শতাংশ।

অর্থনৈতিক বিশ্লেকরা বলছেন, বাংলাদেশ যে এগিয়ে যাচ্ছে এটি তারই বড় উদাহরণ। গত কয়েক বছর ধরেই দেশের মাথাপিছু আয় বাড়ছে। দেশ যে দ্রুত মধ্যম আয়ের দেশের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে এটি তারই লক্ষণ। কিন্তু এই অর্জন ধরে রাখা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দীন আহমদ।

তিনি বলেন, বেতন বাড়ার কারণে প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ১১ শতাংশ হলেও ব্যক্তি খাতে বিনিয়োগ ও কৃষি খাতের প্রবৃদ্ধি ভালো নয়। এজন্য অর্জন ধরে রাখা কঠিন হতে পারে।

জানা গেছে, গত অর্থবছর জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছিল ৬.৫৫ শতাংশ। অন্যদিকে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৬.৮ শতাংশ অর্জিত হবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছিল বিশ্বব্যাংক। একইভাবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ৬.৯ শতাংশ এবং এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবিও) ৭.১ শতাংশ জিডিপির পূর্বাভাস দিয়েছিল।

মুস্তফা কামাল বলেন, ৭ দশমিক ১১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন খবর জানতে পেরে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের মানুষকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, দেশ যে এগিয়ে যাচ্ছে এটি তারই বড় উদাহরণ। এটি অর্জন সম্ভব হয়েছে দেশের সব শ্রেণি-পেশার মানুষের কারণে। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, সবাই মিলে কাজ করলে আমরা কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারব।

পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, বিগত অর্থবছরে সেবা এবং শিল্প খাতের ওপর ভর করে বেড়েছে এ প্রবৃদ্ধি। শিল্প খাতে প্রবৃদ্ধি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১ দশমিক ০৯, যা গত অর্থবছরে ছিল ৯ দশমিক ৬৭ শতাংশ। সেবা খাতে প্রবৃদ্ধি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ২৫, যা গত অর্থবছরে ছিল ৫ দশমিক ৮০ শতাংশ। কৃষি খাতে প্রবৃদ্ধি কিছুটা কমে হয়েছে ২ দশমিক ৭৯, যা গত অর্থবছর ছিল ৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ।

মুস্তফা কামাল দাবি করেন, এ সময়ের মধ্যে বিশ্বের যতগুলো দেশ তাদের প্রবৃদ্ধি ৬ শতাংশের উপরে ধরে রাখতে পেরেছে তার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। বর্তমানে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ছে।

পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাব মতে, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি ছিল ৬.০৬, ২০১২-১৩ অর্থবছরে ছিল ৬.০১ এবং ২০১১-১২ অর্থবছরে ছিল ৬.৫২ শতাংশ।

প্রবৃদ্ধি হওয়ার কারণে বেড়েছে জিডিপির আকার। ২০১৫-১৬ বছরে জিডিপির আকার টাকার অংকে দাঁড়িয়েছে ১৭ লাখ ৩২ হাজার ৮৬৩ কোটি, যা আগের অর্থবছরে ছিল ১৫ লাখ ১৫ হাজার ৮০২ কোটি টাকা।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.