চার ম্যাচ পর জয় পেল খুলনা

১৭১ রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে তাইজুলের ঘূর্ণি বলে বিভ্রান্ত হয়ে ৫৬ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে যায় সিলেট সিক্সার্স। এরপর পঞ্চম উইকেটে ৮১ রানের জুটি গড়ে দলকে খেলায় ফেরান নিকোলাস পুরান ও মোহাম্মদ নওয়াজ। এরপর ৮ রানের ব্যবধানে নিকোলাস ও নওয়াজ আউট হলে ম্যাচ থেকে কার্যত ছিটকে যায় সিলেট।

২১ রানে জয় পায় খুলনা টাইটানস। টানা চার ম্যাচে পরাজয়ের পর জয়ের মুখ দেখল খুলনা টাইটানস। নিজেদের নবম ম্যাচে দ্বিতীয় জয় পেল মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের নেতৃত্বাধীন দলটি।

জয়ের জন্য শেষ দিকে সিলেটের প্রয়োজন ১৬ বলে ৩৪ রান। এমন অবস্থায় ডেভিড ওয়াইজের বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন নিকোলাস। তার আগে ২১ বলে তিন চার ও এক ছক্কায় ২৮ রান করেন তিনি।

ঠিক পরের ওভারে ফেরেন দুর্দান্ত খেলতে থাকা মোহাম্মদ নওয়াজ। দলকে জয়ের স্বপ্ন দেখিয়ে যাওয়া নওয়াজ ফেরেন স্বদেশি জুনায়েদ খানের শিকার হয়ে। প্যাভেলিয়নে ফেরার আগে ৩৪ বলে দুই চার ও চার ছক্কায় ৫৪ রান করেন নওয়াজ।

শেষ ওভারে জয়ের জন্য সিলেটের প্রয়োজন ছিল ২৬ রান। ইয়াসির শাহের করা ওভারের দ্বিতীয় বলে বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন অধিনায়ক সোহেল তানভির। শেষ তিন বলে প্রয়োজন ছিল ২৩ রান। জাকির আলী ও শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতে নামা নাসির হোসেনের পক্ষে আর কিছুই করার ছিল না। ২১ রানে জয় পায় খুলনা টাইটানস।

খুলনা টাইটানসের বিপক্ষে ১৭১ রানের টার্গেটে ব্যাটিংয়ে নেমে ইনিংসের প্রথম বলেই বোল্ড ওপেনার লিটন কুমার দাস। শুভাশীষ রায়ের করা ডেলিভারিটি লিটনের ব্যাটে চুমু খেয়ে স্টাম্পে গিয়ে আঘাত হানে। মাত্র এক বল খেলেই সাজঘরে ফেরেন সিলেট সিক্সার্সের এই ওপেনার।

শূন্য রানে লিটন দাসের উইকেট হারিয়ে প্রাথমিক বিপর্যয়ে পড়ে যাওয়া সিলেটকে খেলায় ফেরানোর আগেই বিপদে পড়েন সাব্বির রহমান রুম্মন। দলীয় ৩২ রানে তাইজুল ইসলামের বলে ডেভিড ওয়াইজের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন সাব্বির। আগের ম্যাচে ৮৫ রান করা সাব্বির, এদিন ফেরেন মাত্র ১৩ রানে।

এরপর তাইজুলের তোপের মুখে পড়ে ২ রানের ব্যবধানে ফেরেন কাপালি ও আফিফ। সাজঘরে ফেরার আগে আফিফ করেন ২৪ বলে ২৯ রান। ১৬ বলে ১১ রান করেন কাপালি।

খুলনা টাইটানস ৯ উইকেটে ১৭০

অলক কাপালির বোলিং তাণ্ডবের পরও ৯ উইকেটে ১৭০ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়ে খুলনা টাইটানস। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৪৮ রান করেন টাইটানসের জিম্বাবুয়ান ক্রিকেটার ব্রান্ডন টেইলর। ইনিংসের শেষ দিকে ২৫ বলে ৩৮ রান করেন ডেভিড ওয়াইজ। এছাড়া ২৩ বলে ৩৩ রান করেন ওপেনার জুনায়েদ সিদ্দিকী। সিলেট সিক্সার্সের হয়ে ৪ ওভারে ২২ রানে ৪ উইকেট নেন কাপালি।

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ২৮তম ম্যাচে বুধবার মিরপুরে সিলেট সিক্সার্সের বিপক্ষে টস হেরে প্রথমে ব্যাটিং করে খুলনা টাইটানস। ব্রান্ডন টেইলরকে সঙ্গে নিয়ে উড়ন্ত সূচনা করেন জুনায়েদ সিদ্দিকী। উদ্বোধনীতে ৬.৫ ওভারে ৭৩ রানের জুটি গড়েন তারা।

এরপর তিন রানের ব্যবধানে ২ উইকেট হারায় খুলনা টাইটানস। অলক কাপালির লেগ স্পিনে বিভ্রান্ত জুনায়েদ সিদ্দিকী। সাজঘরে ফেরার আগে ২৩ বলে ছয়টি বাউন্ডারির সাহায্যে ৩৩ রান করেন খুলনার এই ওপেনার। এর আগের দুই ম্যাচে ১২ ও ১৩ রান করে ফেরেন জুনায়েদ।

বিপিএলে নিজের প্রথম ম্যাচে খেলতে নেমেই আল-আমিনের উইকেট তুলে নেন সিলেট সিক্সার্সের পাকিস্তানি অলরাউন্ডার মোহাম্মদ নওয়াজ। তার অফ স্পিনে বিভ্রান্ত হয়ে মাত্র ২ রানে ফেরেন আল-আমিন। এর আগে খেলা দুই ম্যাচে ৪ ও ৫ রান করেন খুলনার এই অলরাউন্ডার।

এরপর চার নম্বর পজিশনে ব্যাটিংয়ে নেমে নওয়াজের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হন নাজমুল হোসেন শান্ত।সাজঘরে ফেরার আগে ১৩ বলে ১৭ রান করেন এই অলরাউন্ডার। এর আগের ম্যাচে ৪৮ রান করেন শান্ত।

ইনিংসের শুরু থেকে দুর্দান্ত খেলা খুলনা টাইটানসের জিম্বাবুয়ের ওপেনার ব্রান্ড টেইলরকে সাজঘরে ফেরান কাপালি। তার আগে ৩১ বলে চারটি চার ও দুটি ছক্কায় ৪৮ রান করেন টেইলর।

দলের ব্যাটিং বিপর্যয়ের মুহূর্তে হাল ধরতে পারেননি আরিফুল হক ও অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। কাপালির তৃতীয় ও চতুর্থ শিকারে পরিণত হওয়ার আগে শূন্য ও ৩ রানে ফেরেন আরিফুল-রিয়াদ।

ইনিংসের শেষ দিকে ব্যাটিং তাণ্ডব চালান ডেভিড ওয়াইজ। তার ২৫ বলে ২ চার ও সমান ছক্কায় গড়া ৩৮ রানে ভর করে ৯ উইকেটে ১৭০ রান সংগ্রহ করে খুলনা।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

খুলনা টাইটানস: ২০ ওভারে ১৭০/৯ (টেইলর ৪৮, ওয়াইজ ৩৮, জুনায়েদ ৩৩; কাপালি ৪/২২)।

সিলেট সিক্সার্স: ২০ ওভারে ১৪৯/৭ (নওয়াজ ৫৪, আফিফ ২৯, নিকোলাস ২৮; তাইজুল ৩/৩২)।

ফল: খুলনা ২১ রানে জয়ী।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.